bibhuti bushan in cinema

বড়পর্দায় বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়

শ্রীমান রসিকলাল মুখুজ্যে ওরফে ‘রসুকে’ বছর পনেরোর ওই পুঁচকে ছোড়ার জন্যে বাপ বনমালী মুখুজ্যের চোখের ঘুম প্রায় পালাতে বসেছে এমন কোনও দুষ্টুমি নেই, যা তার সাধ্যের বাইরে এমন কোনও ডানপিটেমি নেই, যাতে সে পোক্ত নয় ইস্কুলের মাস্টারমশাই আর পাড়াপড়শিদের নালিশ শুনতে শুনতে বনমালীবাবুর কান ঝালাপালা লেখাপড়ায় সে বরাবরই কাঁচা—বিশেষত ইতিহাসে পরীক্ষার খাতায় গোল্লা পাওয়াটা তার ভাগ্যের লিখন কিন্তু এরই মধ্যে, কী করে, হঠাৎ ইতিহাসের বিখ্যাত বীর পৃথ্বীরাজের ভাগ্যটা ফিরে গেল অর্থাৎ কখন যেন রসিক আবিষ্কার করে ফেলল যে, শৌর্য্যে বীর্যে চেহারার দাপটে এবং আরও অনেক অনেক গুণপনায় রাজার মতো রাজা যদি কেউ ভূ-ভারতে জন্মে থাকে, তো সে হল পৃথ্বীরাজ— আর কেউ নয় ব্যস্, সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা জারি হল যে, গোলকপুর হাইস্কুলের তাবৎ পড়ুয়াদের মধ্যে সবাই যেন আজ থেকে মুকুটহীন শ্রীমান রসিকলালকে রাজা পৃথ্বীরাজের সম্মান দেয় অন্যথায় উচিত শিক্ষা অবশ্যম্ভাবী ব্যাপারটা অবশ্য খুব সহজে নিষ্পত্তি হয়নি সহপাঠীদের মধ্যে বিরোধী দলের সর্দার অন্তা এ হুকুম অমান্য করে নিজেকে ‘আলেকজান্ডার’ বলে ঘোষণা করতেই বেধে গেল ধুন্দুমার কাণ্ড টিফিন পিরিয়ডে দুই রাজার লড়াইতে বেশ কিছু সৈন্য জখম হল অন্তার নালিশে হেডমাস্টার মশাইয়ের হাতে রসিকের নাম কাটা গেল ইস্কুলের খাতা থেকে খবরটা বনমালীবাবুর কানে পৌঁছতেই, তিনি ঠিক করলেন ছেলেকে খুনই করে ফেলবেন নিস্তারের পথ না পেয়ে রসিক হল নিরুদ্দেশ বাড়িটা যখন মড়া কান্নায় কাঁদছে, তখন রসিককে রেল পুলিশের হাতে ধরা পড়ে বাড়ি ফিরতেই হল বাড়ির মেয়েদের পীড়াপীড়িতে রসিককে দাঁড়াতে হল ছাদনাতলায়, টোপর মাথায় দিয়ে বউয়ের নাম অমলা ফুলশয্যার রাতেই বোঝা গেল মেয়েটি বড় সহজ নয় দ্বিরাগমনে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে পরম পূজনীয় শ্বশুরমশাই পান্নালাল চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ হতেই কী যে হয়ে গেল রসিকের মধ্যে, একটার পর একটা অভাবনীয় অঘটন ফল হল এই যে জামাইয়ের উপর খড়গহস্ত পান্নালাল রেগেমেগে ঘোষণা করলেন, আজ থেকে মেয়ে তার বিধবা অমন বাঁদরের গুষ্টির ছেলের সঙ্গে তার কোনও কুটুম্বিতে নেই ‘বাঁদরের গুষ্টি’! চমকে উঠলেন বনমালী হতে পারে তার ছেলে বিচ্ছু, তাই বলে বংশ তুলে গালাগাল বললেন, চাইনে অমন ঘরের বউ তিনি ছেলের আবার বিয়ে দেবেন বড়রা যখন বংশের ইজ্জৎ নিয়ে মাথা ফাটাফাটি করছে, তখন রসিক আর অমলা ঘর বাঁচাতে ব্যাকুল 

কী করে নতুন বিয়ে বন্ধ করা যায়? কেন? ইতিহাসে লেখা নেই? না হয় পরীক্ষায় বরাবর গোল্লাই পেয়েছে রসিক, তাই বলে পৃথ্বীরাজের গল্পটাও কি সে পড়েনি? পড়েনি, কেমন করে জয়চন্দ্রের স্বয়ম্বর সভা থেকে সংযুক্তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে পৃথ্বীরাজকে ছদ্মবেশ ধারণ করতে হয়েছিল সেইি কাজই করবে রসিকলাল উদ্ধার করবে তার বিয়ে করা বউ অমলাকে 

bibhuti-bhusan

এই যে গল্প বললাম, পাঠকেরা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন কোন্ ছবির গল্প এটি ঠিকই ধরেছেন ছবির নাম ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ দমফাটা হাসির ছবি এর কাহিনিকার হলেন বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় ছবিটির পরিচালক তরুণ মজুমদার বাল্যপ্রেম নিয়ে ছবি করতে তরুণবাবুর কৃতিত্ব অনস্বীকার্য ‘বালিকা বধূ’ই তার প্রমাণ এখানে রসিকের চরিত্রে নিয়ে এলেন নবাগত অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে, অমলার চরিত্রে নবগতা মহুয়া রায়চৌধুরীকে তাঁদের কাছ থেকে পরিচালক এমন অভিনয় আদায় করে নিলেন যে, দর্শকেরা কেউ ভুলতে পারবেন না সঙ্গে জমিয়ে দিলেন বনমালীর চরিত্রে সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পান্নালাল চৌধুরীর চরিত্রে উৎপল দত্ত বিশেষ করে ‘রায়বাহাদুর’ খেতাব পাওয়ার জন্য পান্নালাল যখন ভুলভাল ইংরাজি বলেন, সে অভিনয়ে উৎপল দত্ত সবাইকে মাতিয়ে দেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুর করা তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘হরিদাসের বুলবুল ভাজা টাটকা তাজা খেতে মজা’ গানটিতে বাঙালিরা আজও মজে আছেন লতা মুঙ্গেশকরকে দিয়ে হেমন্তবাবু গাইয়েছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত—‘সখী ভাবনা কাহারে বলে সখী যাতনা কাহারে বলে’ সুপার ডুপার হিট ছবি ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ (১৯৭৩)

বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের (১৮৯৪-১৯৮৭) তিন পুরুষের বাস বিহারের দ্বারভাঙায় বহু উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের রচয়িতা সাহিত্যের তিনটি পৃথক ধারার চমৎকার প্রকাশ ঘটেছে তাঁর জনপ্রিয়তম উপন্যাস ‘নীলাঙ্গুরীয়’, কৌতুক গল্পগ্রন্থ ‘বরযাত্রী’ এবং ‘রাণু’ সিরিজের গল্পমালায় হাসির গল্পের লেখক হিসাবে তাঁর সৃষ্ট গণশা, ঘোতনা এবং কে. গুপ্ত বিশেষভাবে স্মরণীয় কৌতুক ও স্নিগ্ধ প্রেমের গল্পকার হিসাবে তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি ছিল তিন খণ্ডে লেখা তাঁর ‘স্বর্গাদপি গরীয়সী’ গ্রন্থে স্নিগ্ধ করুণা ও মমত্বের পরিচয় লিপিবদ্ধ হয়ে আছে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘নীলাঙ্গুরীয়’ তাঁর কাহিনির প্রথম চিত্ররূপও বটে ‘নীলাঙ্গুরীয়’ ছবি মুক্তি পেয়েছিল ৩০ জুলাই (১৯৪৩) ছবির প্রযোজক ছিলেন ইস্টার্ন টকিজের পক্ষে সুরেন্দ্ররঞ্জন সরকার চিত্রনাট্য ও পরিচালক দায়িত্ব সম্পাদন করেছিলেন গুণময় বন্দ্যোপাধ্যায় সুবল দাশগুপ্ত সুরারোপিত গানগুলি লিখেছিলেন শৈলেন রায় ছবির চিত্রগ্রাহক অজয় কর সম্পাদক সন্তোষ গাঙ্গুলি প্রচুর শিল্পীর ভিড় এ ছবিতে অভিনয় করলেন ছবি বিশ্বাস, যমুনা সিংহ, ধীরাজ ভট্টাচার্য, জহর গঙ্গোপাধ্যায়, রেণুকা রায়, মলিনা দেবী, পূর্ণিমা দেবী, ইন্দু মুখোপাধ্যায়, কানু বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যাম লাহা প্রমুখ শিল্পী এই ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন কমল মিত্র, ছোট্ট একটি চরিত্রে ছবিটি অবশ্য ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করতে পারেনি যেহেতু আমাদের শতকরা আশি ভাগ ছায়াছবির সংরক্ষণের (Restoration) ব্যবস্থা ছিল না, তাই অধিকাংশ পুরনো বাংলা ছবির মতো এই ছবিও এ প্রজন্মের দর্শকেরা দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন 

sriman pritwiraj

দ্বিতীয় যে ছবিটি বিভূতিভূষণের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে তার নাম ‘বরযাত্রী’ (১৯৫১) ন্যাশনাল প্রোগ্রেসিভ পিকচার্সের ব্যানারে এ ছবি নির্মিত, যারা এর আগে আমাদের উপহার দিয়েছিলেন প্রথম কিশোর ছবি ‘পরিবর্তন’ ‘পরিবর্তন’ ছবির পরিচালক সত্যেন বোস এই ‘বরযাত্রী’ ছবিরও পরিচালক এও এক দমফাটা হাসির ছবি এ ছবির কলাকুশলীরা পরবর্তীকালে দিকপাল হয়ে উঠেছিলেন ছবির সঙ্গীত পরিচালক সলিল চৌধুরী গীতিকার কবি বিমলচন্দ্র ঘোষ ও সলিল চৌধুরী চিত্রগ্রাহক বিমল মুখোপাধ্যায় শিল্প নির্দেশক বীরেন নাগ শব্দযন্ত্রী তপন সিংহ সম্পাদক অর্ধেন্দু চট্টোপাধ্যায় ছবির শুটিং হয়েছিল কুঁদঘাটের কাছে ক্যালকাটা মুভিটন স্টুডিওতে এ ছবির শিল্পীরা প্রায় সবাই নতুন বা টুকটাক কাজ করেছেন, কিন্তু এই ছবির সুবাদে তাঁরা রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন সেই তালিকায় আছেন কালী বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুপকুমার, হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, শীতল বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুণ চৌধুরী, যমুনা সিংহ, সন্ধ্যা দেবী প্রমুখ শিল্পী এককথায় সুপারহিট ছবি

তপন সিংহ যখন স্বনামে ছবি পরিচালনা করতে এগিয়ে এলেন, তখন তৃতীয় যে ছবিটি বানালেন সেটি বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের গল্প থেকে, তার নাম ‘টনসিল’ (১৯৫৬) তপন সিংহ নিজেই চিত্রনাট্য লিখলেন এ ছবিতে প্রথম নায়িকা হিসেবে সুযোগ পেলেন মাধবী মুখোপাধ্যায় তবে তখন তাঁর নাম ছিল মাধুরী মুখোপাধ্যায় তিনি মাধবী হিসাবে পরিচিত হলেন মৃণাল সেন পরিচালিত ‘২২শে শ্রাবণ’ ছবি থেকে এ ছবির অন্যান্য শিল্পীরা হলেন কালী বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুপ কুমার, শ্যাম লাহা, নৃপতি চট্টোপাধ্যায়, অনু দত্ত প্রমুখ শিল্পী হাস্যরস জমিয়ে তুলতে এই সব শিল্পীরা এতটুকু কার্পণ্য করেননি তপন সিংহ যে আমাদের নানান ধরনের ছবি উপহার দিয়েছেন তার মধ্যে ‘টনসিল’ কমেডি ছবি হিসেবেই দর্শকদের মনোরঞ্জন করেছে

bar yatri

বিখ্যাত কমেডি অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি প্রযোজনার কাজেও হাত দিয়েছিলেন কাহিনিকার বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় পরিচালক নির্মল মিত্র ছবির নাম ‘কাঞ্চন মূল্য’ (১৯৬১) নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়ের চিত্রনাট্যের গুণে রগড়ের দৃশ্যগুলিতে দর্শকেরা হেসে লুটোপুটি শিল্পীরা প্রত্যেকেই জমিয়ে দিয়েছেন ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’ ছবির জুটি এখানেও জুটি বেঁধেছেন অর্থাৎ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাসবী নন্দী অন্যান্য চরিত্রে জমিয়েছেন ছবি বিশ্বাস, বিকাশ রায়, কমল মিত্র, অনিল চট্টোপাধ্যায়, অনুপকুমার, তুলসী চক্রবর্তী, গীতা দে, শ্যাম লাহা, কালীপদ চক্রবর্তী, প্রেমাংশু বসু, প্রশান্ত কুমার, রাজলক্ষ্মী দেবী, অপর্ণা দেবী, আশা দেবী প্রমুখ শিল্পী ভানুর এক ছেলে মাস্টার গৌতম এবং মেয়ে বাসবী এ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন 

রয় অ্যান্ড কোম্পানির কর্ণধার পশুপতি রায়ের একমাত্র পুত্র সরিৎ রায় (সতীন্দ্র ভট্টাচার্য) ফিরছেন বিলেত থেকে আর ইউরোপ সফর শেষ করে দেশে ফিরছেন শিক্ষিতা সুন্দরী কেতকী আইচ একই জাহাজে, একই ভাবনায় বিভোর দুটি মন কিন্তু বিদেশ ফেরত রমণীকে সরিতের মা কীভাবে মেনে নেবেন পুত্রবধূ হিসাবে অগতির গতি হিসাবে রয়ে গেছেন দলুদা, পুরো নাম দোলগোবিন্দ (রবি ঘোষ) সেই দোলগোবিন্দের নানান রকম কেরামতিতে অবশেষে চার হাতের মিলন হয়েছে এই নিয়ে ছবি ‘দোলগোবিন্দের কড়চা’ (১৯৬৬) কাহিনিকার বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় সারথী গোষ্ঠী এ ছবির পরিচালক অন্যান্য চরিত্রের শিল্পী তরুণ কুমার, সুব্রতা চট্টোপাধ্যায়, বিদ্যা রাও, সীতা মুখার্জি, শৈলেন মুখার্জি, সুশীল মজুমদার, বিধায়ক ভট্টাচার্য, পদ্মা দেবী প্রমুখ চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন বিধায়ক ভট্টাচার্য

বিভূতিভূষণের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত ‘পরিশোধ’ ছবিটি মুক্তি পেল ১৯৬৮ সালে পরিচালক অর্ধেন্দু সেন ছবির নায়ক নায়িকা সৌমিত চট্টোপাধ্যায় ও মাধবী মুখোপাধ্যায় অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করলেন নরেশ মিত্র, তরুণ কুমার, দিলীপ রায়, জহর রায়, মলিনা দেবী, সুলতা চৌধুরী, নৃপতি, বীরেন, শীতল, শিশির বটব্যাল প্রমুখ শিল্পী সুরকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় দুর্বল চিত্রনাট্য (চিত্রনাট্যকার মনোজ ভট্টাচার্য) ছবিটি অকর্ষণীয় করে তুলতে বাধা হয়েছে

বিভূতিভূষণ মুখোপাদ্যায়ের সাড়া জাগানো ‘রানুর প্রথম ভাগ’কে বড় পর্দায় তুলে ধরলেন বিশিষ্ট পরিচালক নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় ছবিটি মুক্তি পেল ১৯৭৫ সালে ছোট্ট শিল্পী নীরা মালিয়াকে দিয়ে নাম ভূমিকায় চমৎকার অভিনয় করালেন পরিচালক দু’চোখ ভরে দেখতে হয় ওই শিশু শিল্পীর অভিনয় অন্যান্য চরিত্রগুলিতে অভিনয় করলেন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, কণিকা মজুমদার, অসীম চক্রবর্তী, বঙ্কিম ঘোষ, গীতা দে, নিভাননী দেবী প্রমুখ শিল্পী পরিচালক নিজেই এ ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে একটি দ্বিজেন্দ্রগীতি ব্যবহার করেছিলেন সঙ্গীত পরিচালক নিখিল চ্যাটার্জি 

cinema tonsil

সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মুম্বই থেকে কলকাতায় এসে মালা সিনহা কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তেমনই একটি ছবি ‘দম্পতি’ বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত এ ছবি মুক্তি পেল ১৯৭৬ সালে অনিল ঘোষ পরিচালক মালা সিনহার বিপরীতে ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক এছাড়াও এ ছবিতে কাজ করলেন উৎপল দত্ত, মহুয়া রায়চৌধুরী, পার্থ মুখার্জি, কালী ব্যানার্জি, তরুণ কুমার, রবি ঘোষ, সতীন্দ্র ভট্টাচার্য, শোভা সেন, কাজল গুপ্ত, সুলতা চৌধুরী, চিন্ময় রায়, সুব্রত সেন শর্মা প্রমুখ শিল্পী গানে গানে ভরা এ ছবির সুরকার ভূপেন হাজারিকা গান গেয়েছেন আশা ভোঁসলে, মান্না দে, আরতি মুখার্জি, অমিত কুমার, সবিতা চৌধুরী ও সুরকার স্বয়ং নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সাধন গুহ ও কল্পনা গুহ

আপাতত বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কাহিনি নিয়ে শেষ যে ছবি দর্শকরা পেয়েছেন, তাও গত শতাব্দীতেই ছবির নাম ‘মাটির স্বর্গ’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮২ সালে লেখকের ‘স্বর্গাদপি গরিয়সী’র অংশ বিশেষ অবলম্বনে এ ছবি নির্মিত পরিচালক বিজয় বসু তিনিই ছবির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন ছবিটির সম্পদ হল এর অভিনয় সেই শিল্পী তালিকায় রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মহুয়া রায়চৌধুরী, মাধবী মুখোপাধ্যায়, লিলি চক্রবর্তী, উৎপল দত্ত, গীতা দে, কালী ব্যানার্জি, ভানু ব্যানার্জি, সন্তু, রবি ঘোষ, বিপ্লব চ্যাটার্জি, বঙ্কিম ঘোষ, তরুণ কুমার, হরিধন মুখোপাধ্যায়, অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, মৃণাল মুখার্জি প্রমুখ শিল্পী এ ছবিতে প্রচুর গান শ্যামল মিত্রের সুরে গানগুলি গেয়েছেন মান্না দে, সুরকার স্বয়ং, হৈমন্তী শুক্লা, অরুন্ধতী হোমচৌধুরী, রামকুমার চ্যাটার্জি, হরিধন মুখোপাধ্যায়, শক্তি ঠাকুর প্রমুখ শিল্পী দর্শক সমালোচক প্রশংধন্য ছবি ‘মাটির স্বর্গ’

বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের আরও অনেক গল্প উপন্যাস রয়েছে, যা উপযুক্ত চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকের হাতে পড়লে দর্শকদের এখনও অকর্ষণ করতে পারবে বলে, নির্দ্ধিধায় বলা যায় তেমন প্রযোজক পরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি এই লেখার মাধ্যমে